উদ্দীপকঃ-
=> শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে একটি জাতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে কুরআনের আলোকে বলেন যে, উক্ত জাতির পুত্র সন্তানদেরকে একজন অত্যাচারী শাসক হত্যা করত এবং কন্যা সন্তানদেরকে ভোগের জন্য জীবিত রাখত। আল্লাহ পাক উক্ত জাতিকে রক্ষার জন্য এবং অত্যাচারী শাসককে প্রতিরোধ করার জন্য একজন রাসুল প্রেরণ করেন।
খ. "মু্নাফিকদের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্নতম স্থানে" ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে কোন জাতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে? সে জাতির নিয়ামতসমূহ বর্ণনা করো।
ঘ. পাঠ্যবইয়ের আলোকে অত্যাচারী শাসকের পরিণতি বার্ণনা করো?
প্রশ্নের উত্তরঃ-
খ) মুনাফিকের জন্য দুনিয়াতে যেমন চরম লাঞ্ছনা ও পরাজয়ের গ্লানি রয়েছে, তেমনি আখিরাতেও রয়েছে চিরস্থায়ী জাহান্নামের ভয়ানক শাস্তি। মুনাফিকরা দ্বিমুখী চরিত্রের অধিকারী। তারা কাফিরদের চেয়েও জঘন্য। কারণ তারা মুসলমানদের সাথে প্রতারণা করে এবং গোপনে ইসলামের ক্ষতি সাধনে লিপ্ত থাকে। এ কারণে মুনাফিকদের জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। যেমন কুরআনে বলা হয়েছে- 'নিশ্চয়ই মুনাফিকদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্থানে' (সুরা আন নিসা-১৪৫)।
উদ্দীপকঃ-
=> রাফী কলেজ পড়ুয়া ছাত্র। সে ইতোপূর্বে কোন ভাল আমল করত না। এখন সে নিয়মিত ইবাদাত করার কারণে দৈনন্দিন সবকাজ সুন্দরভাবে করে। তার নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা ও আদব আখলাক দেখে পাড়ার সকল মানুষ রাফীর প্রশংসা করে। রাফীর বন্ধু শাফী মসজিদের ইমাম সাহেবকে কপট লোকের পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ইমাম সাহেব আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন;
صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُوْنَ
ক. নিসাব কী?
খ. হাদিসটি অনুবাদ করঃ النَّاسُ عَلَى ثِينٍ خَيلِ د.
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত রাফি যে ইবাদতের কারণে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে তার সামাজিক গুরুত্বের বর্ণনা দাও।
ঘ. ইমাম সাহেবের উদ্ধৃত আয়াত صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يرجعون এর অনুবাদ ও ধর্মীয় শিক্ষা আলোচনা করো।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নির্ধারিত পরিমাণকে নিসাব বলে।
খ) বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে রাসুল (স) অত্র হাদিস বর্ণনা করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (স) বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর জীবনাদর্শ ও ধর্মমতের দ্বারা প্রভাবিত হয়। অতত্রব তোমাদের প্রত্যেকের অবশ্যই দৃষ্টি রাখা উচিত যে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে।
গ) উদ্দীপকে সালাতের সামাজিক গুরুত্বের প্রতিফলন ঘটেছে।। সালাত সম্মিলিতভাবে সম্পাদন করার মতো ইবাদত। একা একা পালন করলে সালাত আদায় হয় বটে, কিন্তু রাসুলুল্লাহ (স) জামায়াতবদ্ধ সালাত আদায়ের উপরেই গুরুত্বারোপ করেছেন। জামায়াতে সালাত আদায় একটি সম্পূর্ণ ধর্মীয় সামাজিক ইবাদত প্রক্রিয়া। এ জন্য সালাতের সামাজিক গুরুত্ব ও প্রভাব অত্যন্ত বেশি। যা রাফীর জীবনে পরিবর্তন ঘটিয়েছে।উদ্দীপকে দেখা যায়, রাফী পূর্বে কোনো ভালো আমল করতো না। এখন সে নিয়মিত সালাত আদায় করে। ফলে জীবন অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। যার কারণে মানুষ এখন তার প্রশংসা করে। প্রকৃতপক্ষে সালাতের সামাজিক গুরুত্বই এরূপ। এটি সমাজে মানুষের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা ও আদব-আখলাকের প্রচলন ঘটায়। একসাথে সালাত আদায়ের ফলে মুসলিমদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করে। এ কারণেই উদ্দীপকের রাফী তার দৈনন্দিন সবকাজ সুন্দরভাবে করে। তার নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা ও আদব আখলাক সকলের নিকট প্রশংসিত। সালাতের সামাজিক গুরুত্বের বাস্তব প্রতিফলন এক্ষেত্রে সুস্পষ্ট। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, উদ্দীপকটি সালাতের সামাজিক গুরুত্বের দিকটি তুলে ধরার ক্ষেত্রে এক অনুপম দৃশ্যপট অঙ্কন করেছে।
ঘ) আয়াতের অনুবাদ তারা বধির বোবা ও অন্ধ; কাজেই তারা ফিরে আসবে না। এ আয়াতের শিক্ষাগুলো হলো-
মুনাফিকরা সত্যকে জানার পরও মনে প্রাণে তা গ্রহণ করে না বরং মুসলমানদের সাথে সুযোগ-লাভের আশায় প্রতারণা করে। তারা ইসলামের সত্য বাণী শোনার পরও না শোনার ভান করে। এ জন্য তারা বধির। তাদের মুখ আছে কিন্তু তারা মুখ দিয়ে ইসলামের সত্য বাণী বলতে চায় না। এ জন্য তারা বোবা। তাদের চোখ আছে কিন্তু তারা তা দিয়ে সত্যকে দেখে না। এ জন্য তারা অন্ধ। মুনাফিকরা সত্যের পথে, ইসলামের পথে প্রত্যাবর্তন করবে না। তারা সব সময় ঐশী আলোয় আলোকিত ইসলামের পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকতে চায়। তাই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের নিচতম স্তর।