উদ্দীপকঃ-
বৃক্ষ মানুষের পরম উপকারী বন্ধু। বৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বৃক্ষ থেকে আমরা অক্সিজেন পাই। এ ছাড়া বৃক্ষ ফলমূল, কাঠ ইত্যাদি দিয়ে অনেক উপকার করে। বৃক্ষের সৌন্দর্য আমাদের হৃদয়কে আপ্লুত করে। বৃক্ষ নিধনজনিত অনিবার্য পরিণতির হাত থেকে রেহাই পেতে প্রতিবছর সাধারণ মানুষ বৃক্ষরোপণ অভিযান চালায়। সাধারণ মানুষের এ অভিযানে শিশু, মেহগনি, সেগুন, আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা প্রভৃতি জাতের বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়ে থাকে। তাই বন সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ করেই আগামী প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসের উপযোগী করে রাখা আমাদের কর্তব্য।
ক. নিমগাছ কী ধরনের উদ্ভিদ?
খ. নিমগাছ রোপণের কর্মসূচি নেওয়া দরকার কেন?
গ.উদ্দীপকের মতো তোমার জানা একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির কাহিনি বর্ণনা কর।
ঘ. পৃথিবীকে বাসযোগ্য ও সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য বৃক্ষরোপণ ও বন সংরক্ষণ অপরিহার্য- উক্তিটির পক্ষে তোমার যৌক্তিক মতামত তুলে ধর।
উত্তরঃ-
ক) নিমগাছ ভেষজ উদ্ভিদ।
খ) নিমগাছ একটি ঔষধি বৃক্ষ এবং মানুষের জন্য অনেক উপকারী। তাই আমাদের নিমগাছ রোপণের কর্মসূচি নেওয়া দরকার।নিমগাছের হাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। খোস, দাদ, হাজা, চুলকানি ইত্যাদি চর্মরোগে নিমগাছ মহৌষধের কাজ করে। নিমগাছের কচি পাতা যকৃতের জন্য উপকারী। নিমগাছের নানা উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদের ব্যাপক হারে নিমগাছ রোপণের কর্মসূচি নেওয়া দরকার।
গ) উদ্দীপকের মতো আমিও একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলাম।বৃক্ষ মানুষের পরম উপকারী বন্ধু। এটি আমাদেরকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচায়। তাই সবাই ৫ই জুন পরিবেশ দিবস পালন করে থাকে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে গাছ লাগানোর গুরুত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন গাছের চারা রোপণে উদ্বুদ্ধ করা হয়। > উদ্দীপকের মতো আমিও আমার বন্ধুদের নিয়ে একবার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছিলাম। গত ৫ই জুন ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। আমরা স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে একটি দল গঠন করে শিক্ষকদের সহযোগিতায় ঐ দিন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ওপর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করি। উক্ত আলোচনা সভায় চারপাশের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ একত্রিত হয়ে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য জানতে পারে। আমি বন্ধুদের নিয়ে শিক্ষকদের সহযোগিতায় স্কুল তহবিল থেকে কিছু টাকা ও স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রীর আর্থিক সহযোগিতায় স্কুল চত্বরে কিছুসংখ্যক বৃক্ষ রোপণ করেছিলাম। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের মতো আমিও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছিলাম।
ঘ) জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং আমাদের অর্থনৈতিক ও ব্যবহারিক জীবনে বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম।বৃক্ষ মানুষের পরম উপকারী বন্ধু। এটি আবহাওয়া ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। গাছ থেকে আমরা অক্সিজেন পাই। এ ছাড়া গাছ থেকে আমরা ফলমূল, কাঠ ইত্যাদি পেয়ে আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটিয়ে থাকি। এ ছাড়া ঝড়-ঝঞ্ঝা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে গাছ আমাদের রক্ষা করে।উদ্দীপকে দেখা যায়, বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু। তাই 'গাছ লাগান, দেশ বাঁচান'- এ স্লোগান সামনে রেখে আমাদের বৃক্ষরোপণ অভিযানকে জোরদার করতে হবে। যেকোনো দেশের জন্য মূল ভূখণ্ডের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা দরকার। কিন্তু সে তুলনায় বাংলাদেশের বনভূমির পরিমাণ মোট আয়তনের ১৭ ভাগ, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এরপরও আমরা নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস করছি। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টিপাত কমে গিয়ে আকস্মিক বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ে প্রতিবছর আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই বলা যায়, এসব ক্ষতি এড়ানোর জন্য এবং পৃথিবীকে বাসযোগ্য ও সুন্দর করে গড়ে তুলতে বৃক্ষরোপণ ও বনসংরক্ষণ অপরিহার্য।