প্রশ্ন-
ক. তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ কী?
খ. জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন লাইনে কিভাবে সিস্টেম লস কমানো যায়? ব্যাখ্যা করো।
গ. বদ্ধ বর্তনীতে কিভাবে তড়িৎ পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ১ম বর্তনীতে AC তড়িৎ উৎস নিলে ২য় বর্তনীতে তড়িৎ পাওয়ার কৌশল ব্যাখ্যা করো।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) পরিবর্তনশীল চৌম্বক ক্ষেত্রের দ্বারা কোনো বর্তনীতে তড়িচ্চালক শক্তি বা তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টির ঘটনাকে তড়িৎ চুম্বক আবেশ বলে।
খ) উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সঞ্চলনের ফলে বিদ্যুৎ গ্রিড তথা পরিবাহীর রোধের কারণে যে লস হয় তা অনেকাংশে কমে যায়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তির জন্য উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে তড়িৎ প্রবাহের মান কম হয়। এর ফলে রোধজনিত লসের পরিমাণও কমে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- যদি সঞ্চালন লাইন ভোল্টেজকে দশগুণ বৃদ্ধি করা হয়। তখন তড়িৎ প্রবাহের মান এক দশমাংশ হয়। যার ফলে বিদ্যুৎ গ্রিডের I'R লসের পরিমাণ একশত ভাগের এক ভাগ হয়। অর্থাৎ সঞ্চালন লাইনের ভোল্টেজকে বৃদ্ধি করে সিস্টেম লস কমানো যেতে পারে।
গ) উদ্দীপকের চিত্রের ১ম বর্তনীতে একটি তড়িচ্চালক শক্তির উৎস যুক্ত আছে। ২য় বর্তনীতে কোন তড়িচ্চালক শক্তির উৎস নেই, শুধুমাত্র একটি গ্যালভানোমিটার যুক্ত আছে। ১ম বর্তনীতে তড়িচ্চালক শক্তির কারণে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হবে যা বর্তনীর কুণ্ডলীর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় একটি চৌম্বকক্ষেত্র সৃষ্টি করবে। এই সময়ে ২য় বর্তনীর কুণ্ডলী যদি ১ম বর্তনীর কুণ্ডলীর কাছে থাকে তাহলে ১ম বর্তনীর কুণ্ডলীর চৌম্বকক্ষেত্রের কারণে ২য় বর্তনীর কুণ্ডলীতে একটি আবিষ্ট চৌম্বকক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে। এখন ১ম বর্তনীর কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ ক্রমাগত পরিবর্তন করতে থাকলে ২য় বর্তনীর সাথে সংযুক্ত চৌম্বকক্ষেত্রের পরিবর্তন হবে যার ফলে এতে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হবে। ✓ তাই ২য় বর্তনীর গ্যালভানোমিটারে বিক্ষেপ দেখা যাবে। তড়িৎ প্রবাহ বাড়ানোর সময় বিক্ষেপ যেদিকে হবে তড়িৎ প্রবাহ হ্রাসের সময় বিক্ষেপ তার বিপরীত দিকে হবে। ১ম বর্তনীর চৌম্বকক্ষেত্রের কারণে ২য় বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টির এই ঘটনাকে তড়িতচৌম্বক আবেশ বলে।
ঘ) উদ্দীপকের চিত্রে, ১ম বর্তনীতে যদি AC তড়িৎ উৎস নেওয়া হয় এবং ২য় বর্তনী যদি ১ম বর্তনীর কাছে থাকে তাহলে পারষ্পরিক তড়িৎচৌম্বক আবেশ সৃষ্টি হয়। ১ম বর্তনীর কুণ্ডলীকে মুখ্য কুণ্ডলী এবং ২য় বর্তনীর কুণ্ডলীকে গৌণ কুণ্ডলী বিবেচনা করা যায়। ১ম বর্তনীতে AC তড়িৎ উৎসের কারণে মুখ্য কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহ পাওয়া যায়। এই প্রবাহ কুণ্ডলীকে চুম্বকিত করে চৌম্বক বলরেখা উৎপন্ন করে যা মুখ্য কুণ্ডলীতে একটি আবিষ্ট ভোল্টেজ বা তড়িচ্চালক শক্তি উৎপন্ন করে। চৌম্বক বলরেখার যদি কোন ক্ষরণ না হয় তাহলে গৌণ কুণ্ডলীর প্রতি পাকেও একই সংখ্যক বলরেখা সংযুক্ত হবে। ফলে গৌণ কুণ্ডলীতেও ভোল্টেজ বা তড়িচ্চালক শক্তি আবিষ্ট হবে, যা গৌণ কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি করবে। ক্ষমতার কোন অপচয় না হলে মুখ্য কুণ্ডলীর প্রযুক্ত সকল ক্ষমতা গৌণ কুণ্ডলীতে সরবরাহ হবে।