দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাশে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে পাঠদানকালে অধ্যাপক জাফর সাহেব ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করবে। কুরআন তিলাওয়াত নফল ইবাদতগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত। মনে রেখ, কুরআন তিলাওয়াত অন্তরের মরিচা (কালিমা) দূর করে দেয়। যে অন্তরে কুরআনের কোনো অংশ নেই তা একটি শূন্য খাঁচার ন্যায়।
খ. শানে নুজুল কাকে বলে?
গ. অধ্যাপক জাফর সাহেবের উপদেশ তুমি কীভাবে নিজ জীবনে প্রয়োগ করবে বর্ণনা করো।
ঘ. অধ্যাপক জাফর স্যারের শেষোক্ত বক্তব্য বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
খ) শানে নুজুল বলতে আল-কুরআনের সুরা বা আয়াত নাজিলের কারণ বা পটভূমিকে বোঝায়।'শান' শব্দের অর্থ কারণ বা পটভূমি। আর নজুল অর্থ অবতরণ। অতএব শানে নুজুল অর্থ অবতরণের কারণ বা পটভূমি। আল-কুরআনের সুরা বা আয়াতসমূহ বিভিন্ন কারণ বা প্রেক্ষাপটে নাজিল হয়েছে। আর এই কারণ বা প্রেক্ষাপটকেই শানে নুজুল বলা হয়।
গ) কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আমি অধ্যাপক জাফর সাহেবের উপদেশ নিজ জীবনে প্রয়োগ করবো।নফল ইবাদতের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াত করা সর্বোত্তম ইবাদত। এর মাধ্যমে বান্দা অল্প সময়ে, অল্প পরিশ্রমে অধিক সওয়াব লাভ করতে পারে। রাসুল (স) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি কুরআন মজিদের একটি অক্ষর পাঠ করে, সে একটি নেকি পায় এবং এর প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান' (তিরমিযি)। কুরআন তিলাওয়াত করলে গুনাহ মাফ হয়, শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এভাবে কুরআন তিলাওয়াত মানুষকে মর্যাদাবান করে তোলে। তাই জাফর সাহেবের উপদেশ অনুযায়ী সর্বোত্তম নফল ইবাদত পালন ও অন্তরের মরিচা দূর করতে কুরআন তিলাওয়াত করা অপরিহার্য।উদ্দীপকের জাফর সাহেব ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করার জন্য উপদেশ দেন। কারণ কুরআন তিলাওয়াত হলো সর্বোত্তম নফল ইবাদত। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অন্তরের মরিচাও দূর করা যায়। আমাদের বাস্তব জীবন পাপাচারে পরিপূর্ণ। অন্তরের পাপ দূরে করে পুণ্য অর্জন করতে হলে, অধ্যাপক জাফর সাহেবের উপদেশ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত করা অপরিহার্য দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ঘ) অধ্যাপক জাফর স্যারের শেষোক্ত বক্তব্য 'যে অন্তরে কুরআনের কোনো অংশ নেই তা একটি শূন্য খাঁচার ন্যায়'-উক্তিটি যথার্থ। পবিত্র কুরআন মজিদ একাধারে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভাণ্ডার, আল্লাহর সাথে বাক্যালাপের সুযোগ, রহমত ও জান্নাত লাভের উপায়। এর মাধ্যমে বান্দা অল্প সময়ে, অল্প পরিশ্রমে অধিক সওয়াবের অধিকারী হতে পারে। মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন সফলতার দিক নির্দেশনা ও ব্যর্থতার কারণ পবিত্র এই কুরআনে নিহিত আছে। তাই যার অন্তরে কুরআনের কোনো অংশ নেই তা একটি শূন্য খাঁচা ছাড়া আর কিছুই নয়। যার বর্ণনা উদ্দীপকেও পাওয়া যায়।উদ্দীপকে অধ্যাপক জাফর সাহেব কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'যে অন্তরে কুরআনের কোনো অংশ নেই তা একটি শূন্য খাঁচার ন্যায়।' তার উক্তিটি যথার্থই হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাসুল (স) বলেন, 'যে অন্তরে কুরআনের কোনো অংশ নেই, নিশ্চয়ই তা একটি শূন্য ঘরের ন্যায়।' (মিশকাত) সুতরাং, কুরআনবিহীন অন্তরকে শূন্য খাঁচার সাথে তুলনা করে অধ্যাপক সাহেব যথার্থই করেছেন।
সর্বোপরি বলা যায়, মহাগ্রন্থ আল-কুরআন হলো গোটা মানবজাতির জীবনযাপনের পূর্ণ সংবিধান। তাই আমাদের উচিত কুরআনের শিক্ষা গ্রহণ করে বাস্তবে তার প্রয়োগ করা।