“যে-পথ আমার সত্যের বিরোধী, সে পথ ছাড়া আর কোনো পথই আমার বিপথ নয়।”
লেখক সত্যের পূজারি, ন্যায় ও সুন্দরের অনুরাগী। অসত্য ও অন্যায়কে তিনি ঘৃণা করেন। কেননা সেটা বিপথ। তা মানুষকে বিভ্রান্তি ও বিপথে পরিচালিত করে পশুতে পরিণত করে।
"যার ভিতরে ভয়, সে-ই বাইরে ভয় পায়।”
সাধারণত দুর্বল, ষড়যন্ত্রকারী, মিথ্যাবাদীরাই ভয় পায়। এসব তাদের বিবেককে অপরাধী করে তোলে। ফলে তাদের মনে সবসময় ভয় কাজ করে। তাই যার ভেতরে ভয় থাকে, সে-ই বাইরে ভয় পায়। লেখকের ভেতরে- বাইরে কোথাও কোনো ভয় নেই।
"নিজকে চিনলে, নিজের সত্যকেই নিজের কর্ণধার মনে জানলে নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস আসে।"
আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে হলে নিজেকে আবিষ্কার করতে হয়। সত্যকে কর্ণধার বলে মানতে হয়, নিজেকে চিনে নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। আর তাহলেই স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুলে যায়।
“পরাবলম্বনই আমাদের নিষ্ক্রিয় করে ফেললে। একেই বলে সবচেয়ে বড় দাসত্ব।"
দাসত্বের মূল কারণই হলো পরাবলম্বন। পরের অধীনে থেকে, পরের ওপর নির্ভর করে, পরের গোলামি করে এ দেশের মানুষের মেরুদণ্ড বেঁকে গেছে। দাসত্বের ভারে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে আত্মনির্ভরতা-স্বাধীন সত্তা। একে আবার অর্জন করতে হবে।
"আত্মাকে চিনলেই আত্মনির্ভরতা আসে।"
আত্মা মানে 'নিজ সত্তা'। নিজের সত্তাকে ভালো করে চিনতে হয়, তাকে নির্মাণ করতে হয়। আত্মার সত্যের ওপরই আত্মনির্ভরতা পূর্ণতা পায়।
"আমি সে-দাসত্ব হতে সম্পূর্ণ মুক্ত।"
প্রাবন্ধিক সব রকম প্রভাব, প্ররোচনা, হুমকি থেকে মুক্ত। মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকির সঙ্গে বা দেশের শত্রুদের সঙ্গে তিনি আপস করবেন না। কারণ তিনি সত্যকে অস্বীকার করবেন না। কাজেই সব রকম দাসত্ব থেকে তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবেন।
"ভুলের মধ্য দিয়ে গিয়েই তবে সত্যকে পাওয়া যায়।"
ভুল থেকেই শিক্ষা হয়, অভিজ্ঞতা হয়। জীবনের পদে পদে বাধা আসে, সে বাধা অতিক্রম করতে হয়। ভুল থেকে মানুষ নতুন অভিজ্ঞতা ও নতুন শিক্ষা অর্জন করে। বস্তুত ভুল থেকেই আমরা সত্যকে উপলব্ধি করতে পারি।
"মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম।"
যার নিজের ধর্মে বিশ্বাস আছে, যে নিজ ধর্মের সত্যকে চিনেছে, সে কখনো অন্য ধর্মকে ঘৃণা করতে পারে না। সে সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে থেকে মানুষের কথাই বলে, মানুষের জন্যই কাজ করে। কারণ মানুষকে ভালোবাসা, মানুষের জন্য কাজ করা, মানুষ হিসেবে মানুষকে মর্যাদা দেওয়াই সবচেয়ে বড় ধর্ম।