আস্ক টু আন্স প্লাটফর্মে আপনাকে স্বাগতম, সমস্যার সমাধান খুঁজতে প্রশ্ন করুন।।
0 টি ভোট
54 বার প্রদর্শিত
"ব্যবসা-বাণিজ্য" বিভাগে করেছেন (525 পয়েন্ট)

  • অংশীদারি চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তু আলোচনা কর? 
  • অথবা, অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির শর্তাবলি বর্ণনা কর।
  • অংশীদারি ব্যবসায়ের সংজ্ঞা দাও। 
  • "চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি”- ব্যাখ্যা কর?
  • অথবা, “চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি" আলোচনা কর।

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (525 পয়েন্ট)

প্রশ্ন- অংশীদারি চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তু আলোচনা কর? অথবা, অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তির শর্তাবলি বর্ণনা কর।


উত্তরঃ- ভূমিকাঃ অংশীদারি ব্যবসায় গঠনে উদ্যোক্তাদের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো নিজেদের মধ্যে এ ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনা ইত্যাদি বিষয়ে একটি চুক্তি সম্পাদন করা। কারণ চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূলভিত্তি। আর এ চুক্তির বিষয়াবলির লিখিত রূপই হলো চুক্তিপত্র। এ চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তু এমনভাবে নির্ধারণ করা উচিত যাতে ভবিষ্যতে সৃষ্টি হতে পারে এমন সকল সমস্যার সহজ সমাধান এতে পাওয়া সম্ভব হয়।অংশীদারি চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তু/শর্তাবলি : ভবিষ্যতে ঝগড়াবিবাদ ও মামলা-মকদ্দমা এড়াতে হলে অংশীদারি চুক্তিপত্রে যতদূর সম্ভব ব্যবসায়ের আইনসংগত সকল বিষয়ই অন্তর্ভুক্ত হওয়া আবশ্যক। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়াদি অবশ্যই অংশীদারি চুক্তিপত্রে থাকা উচিত-

১. ব্যবসায়ের নামঃ- চুক্তিপত্রে প্রথম লিখিত বিষয় হলো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নাম যা ব্যবসায়ের অস্তিত্ব জ্ঞাপন করে। 

২.অংশীদারগণের নাম ও ঠিকানাঃ- প্রত্যেক অংশীদারের নাম, ঠিকানা ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকবে।

৩. ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও উদ্দেশ্যঃ- কী ধরনের ব্যবসায় হবে এবং এর উদ্দেশ্য কী হবে তা মোটামুটিভাবে চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকবে।এতে অংশীদারদের অধিকার ও দায়িত্ব নিরূপণ সহজতর হয়।

৪. ব্যবসায়ের মেয়াদঃ- নির্দিষ্ট মেয়াদের অংশীদারি ব্যবসায় হলে ব্যবসায়ের কার্যকাল চুক্তিপত্রে লিখিত থাকা বাঞ্ছনীয়।

৫. মূলধনের পরিমাণ ও সংস্থানঃ- ব্যবসায়ে মোট কত মূলধন বিনিয়োগ হবে এবং অংশীদারগণ কে, কী পরিমাণ মূলধন যোগাবেন ইত্যাদি চুক্তিপত্রে উল্লিখিত হওয়া আবশ্যক ।

৬. লাভ-লোকসান বণ্টনঃ- ব্যবসায়ের লাভ-লোকসান কী অনুপাতে বণ্টিত হবে তা চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকলে এ নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিতে পারে না।

৭. পরিচালনাঃ- ব্যবসায় পরিচালনায় কে, কীভাবে অংশগ্রহণ করবে অর্থাৎ অংশীদারদের মধ্যে কে, কী কাজ দেখাশুনা করবে তা চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।

৮. অংশীদারগণের বেতনঃ- ব্যবসায় পরিচালনার জন্য অংশীদারগণ কোনো বেতন পাবে কি না এবং পেলে তার পরিমাণ চুক্তিপত্রে - অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

৯. মূলধনের ওপর সুদঃ- অংশীদারি আইনে মূলধনের ওপর সুদ প্রদানের কোনো নির্দেশ নেই। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ে নিয়োগকৃত মূলধনের ওপর সুদ দেওয়া হলে এর হার চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকবে।

১০. হিসাব রক্ষণাবেক্ষণঃ- ব্যবসায়ের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা চুক্তিপত্রে থাকা বাঞ্ছনীয় ।

১১. টাকা উত্তোলনঃ- অংশীদারগণ ব্যবসায় থেকে অগ্রিম টাকা উত্তোলন করতে পারবে কি না, পারলে এর পরিমাণ কত এ সম্পর্কে চুক্তিপত্রে সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকবে।

১২. টাকা উত্তোলন ও এর সুদঃ- অংশীদারগণ ব্যবসায় থেকে কোনো টাকা উত্তোলন করতে পারবে কি না, পারলে এর পরিমাণ কত এবং উত্তোলনের সুদ দেওয়া হলে সুদের হার কত তা উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।

১৩. ব্যাংক হিসাবঃ- যে ব্যাংকে টাকা রাখা হবে তার নাম, ঠিকানা, হিসাবের ধরন ইত্যাদি সুস্পষ্ট উল্লেখ চুক্তিপত্রে থাকা উচিত।

 ১৪. অংশীদার বহিষ্কার ও গ্রহণঃ- কোন পরিস্থিতিতে কোন অংশীদারকে ব্যবসায় থেকে বহিষ্কার করা যাবে এবং নতুন অংশীদার।গ্রহণ করা হবে কি না ইত্যাদি চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকবে।

১৫. অংশীদারের অবসর গ্রহণঃ- কোনো অংশীদারের ব্যবসায় হতে অবসর গ্রহণ, পাগল অথবা মৃত্যু হলে দায়দায়িত্ব মেটাব। ত ব্যবস্থা চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকতে হবে।

১৬. ব্যাংকের সাথে লেনদেনঃ- ব্যাংকের সাথে লেনদেনের ক্ষেত্রে কে বা কারা চেক স্বাক্ষর করবে তার উল্লেখ চুক্তিপত্রে থাকতে হবে।

১৭. সালিশীঃ- অংশীদারগণের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ দেখা দিলে তা কীভাবে মীমাংসা হবে তা চুক্তিপত্রে উল্লেখ করতে হবে।

১৮. ঋণ গ্রহণ পদ্ধতিঃ- ব্যবসায়ের ঋণ গ্রহণ পদ্ধতি চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকতে হবে।

১৯. সুনামের মূল্যায়নঃ- ব্যবসায়ের সুনাম কীভাবে মূল্যায়িত হবে তা চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকতে হবে।

২০. বিলোপসাধন পদ্ধতিঃ-  ব্যবসায়ের বিলোপসাধন পদ্ধতি এবং সে সঙ্গে ব্যবসায়ের মূল্যায়ন ও সম্পত্তি বণ্টনের নিয়মাবলি চুক্তিপত্রে অবশ্যই উল্লেখ থাকবে।

উপসংহারঃ- উপর্যুক্ত বিষয়সমূহ চুক্তিপত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং এ বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে অংশীদারগণের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ দেখা দিলে তা নিষ্পত্তি করা হয়। উল্লেখ্য যে, চুক্তিপত্রের উল্লিখিত বিষয়াবলি স্বতঃসিদ্ধ কিছু নয়, ব্যবসায়ের প্রয়োজনে সকল অংশীদারের সম্মতিক্রমে এসব বিষয়ের সংশোধন বা সম্প্রসারণ করা যাবে। চুক্তিপত্রে উল্লেখ নেই এমন কোনো বিষয়ে অংশীদারগণের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তা ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে হবে।



প্রশ্ন- অংশীদারি ব্যবসায়ের সংজ্ঞা দাও। "চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি”- ব্যাখ্যা কর?

অথবা, “চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি" আলোচনা কর।


উত্তরঃ- ভূমিকাঃ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করে। চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি। চুক্তি ব্যতিরেকে কোনো অংশীদারি ব্যবসায় গঠিত হতে পারে না। ভবিষ্যতে ঝগড়া-বিবাদ ও মামলা মোকদ্দমা এড়াতে অংশীদারগণ চুক্তি করে থাকে। এক্ষেত্রে চুক্তি লিখিত হয়ে থাকে।

অংশীদারি ব্যবসায়ঃ- অংশীদারি ব্যবসায় মানবসমাজের সর্বপ্রথম সংঘবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এর মূলভিত্তি চুক্তি এবং পারস্পরিক সম্বিশ্বাস।

মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে দুই বা ততোধিক (কিন্তু সাধারণ ব্যবসায়ে ২০ জন এবং ব্যাংকিং ব্যবসায়ে ১০ জনের অধিক নয়) ব্যক্তি স্বেচ্ছায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে যে ব্যবসায় গঠন করে, তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

১৮৯০ সালের ব্রিটিশ অংশীদারি আইনের ১ ধারা অনুসারে, "Partnership is the relation which subsists between persons carrying on business in common with a view to profit " অর্থাৎ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে যৌথভাবে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে যে ব্যবসায় গঠন করে, তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে।

সুতরাং দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মুনাফা অর্জন ও নিজেদের মধ্যে তা বণ্টনের লক্ষ্যে পারস্পরিক সদ্বিশ্বাসে চুক্তির ভিত্তিতে একতাবদ্ধ হয়ে যে ব্যবসায় গঠন করে, তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলা হয়। অংশীদারি ব্যবসায়কে শরীকানা ব্যবসায়ও বলা হয়।

চুক্তি অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি: চুক্তি হচ্ছে অংশীদারি ব্যবসায় গঠনেচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে সম্পাদিত এমন একটি দলিল বা

অনুমোদিত শর্তাবলি যা ব্যবসায়ের গঠন, উদ্দেশ্য, পরিচালনা এবং অংশীদারদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নির্ধারণ করে। এ চুক্তি লিখিত বা মৌখিক হতে পারে। অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের জন্য প্রথমে আবশ্যক চুক্তি। চুক্তি সম্পর্কে ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের ২(জ) ধারায় বলা হয়েছে, "আইনের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য সম্মতিই হলো চুক্তি।" দুই বা ততোধিক সাবালক ও সজ্ঞান ব্যক্তির মধ্যে চুক্তিটি হতে হবে। অংশীদারদের মধ্যে পূর্বে সম্পাদিত চুক্তিই এ সংগঠনের মৌলিক ভিত্তি। অর্থাৎ চুক্তি না হলে অংশীদারি সংগঠন যেমন হয় না বা হতে পারে না, তেমনি বৈধ ব্যবসায় ছাড়াও চুক্তি হবে না। আবার কয়েক ব্যক্তি মিলে কোনো ব্যবসায়ের মুনাফা ভোগ করলেই তা অংশীদারি সংগঠন হবে না। কারণ তারা সামাজিক মর্যাদা বা জন্মগত অধিকার অথবা পদমর্যাদা বলেও সংগঠনের মুনাফা ভোগ করতে পারে। নিচের উদাহরণগুলো থেকে বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে-

১. জন্মগত অধিকারঃ- পিতার মৃত্যুর পর তার ছেলেমেয়েরা উত্তরাধিকারবলে পিতার ব্যবসায়ের মুনাফা ভোগ করতে পারে। তাই বলে তারা অংশীদার নয়। কেননা ব্যবসায়ের অংশীদার হতে হলে তাদের প্রত্যেককে সংগঠনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় তারা জন্মগত অধিকারের বলেই ব্যবসায়ের মুনাফা ভোগ করবে মাত্র।

২. পদমর্যাদাঃ- অংশীদারি সংগঠনের কোনো কর্মচারী বা প্রতিনিধিকে যদি বেতন ও কমিশন বাবদ মুনাফার শতকরা কিছু অংশ দেওয়া হয়, তবে তাকেও অংশীদার বলা যাবে না। কেননা সে অংশীদারদের সাথে মুনাফা ভাগের জন্য পূর্বে চুক্তিবদ্ধ হয় নি।

৩. সামাজিক বন্ধন কোনো নাচ গান বা যাত্রাদলের লোকদের মধ্যে যদি মুনাফা বণ্টনের নিমিত্তে কোনো চুক্তি না থাকে, তবে তাও অংশীদারি সংগঠন হবে না। কারণ সামাজিক বন্ধন বা দলবদ্ধতা অংশীদারিত্বের প্রমাণ নয়।

উপসংহারঃ- সুতরাং অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রধান উপাদান হলো অংশীদারদের মধ্যে চুক্তি। অর্থাৎ যেখানে চুক্তি নেই সেখানে অংশীদারি সংগঠনেরও অস্তিত্ব নেই। কেবল চুক্তির মাধ্যমেই অংশীদারি ব্যবসায়ের সৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূলভিত্তি, পদমর্যাদা নয়।

Ask2Ans এ আপনাকে সুস্বাগতম, এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং Ask2An অন্যান্য সদস্যদের নিকট থেকে উত্তর পাবেন। এখান থেকে যেমন আপনি জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন তেমনিই এটি ব্যবহার করে আপনার জ্ঞান দিয়ে অপরকে সহায়তা করতে পারবেন। জ্ঞানার্জনের অন্যতম বাংলা প্লাটফর্ম হলো Ask2Ans, আমাদের সাথে থাকুন জ্ঞানঅর্জন করুন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 67 বার প্রদর্শিত
21 নভেম্বর 2023 "ব্যবসা-বাণিজ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (525 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 82 বার প্রদর্শিত
08 নভেম্বর 2023 "বিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hasib (569 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 72 বার প্রদর্শিত
14 জানুয়ারি "ব্যবসা-বাণিজ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (525 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 76 বার প্রদর্শিত
0 টি ভোট
1 উত্তর 102 বার প্রদর্শিত
...