উত্তরঃ- আমি গত বছর আমার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম।সেখানে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের অনুষ্ঠান উপভোগ করার। গ্রামীণ পরিবেশে সম্পূর্ণ ভিন্নধারার একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান দেখে আমি আপ্লুত হয়েছিলাম। শহরে নিজের চোখে ও টিভিতে পয়লা বৈশাখ-সংক্রান্ত অনেক অনুষ্ঠান আমি দেখেছি। কিন্তু আমার গ্রামে দেখা পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানটি সত্যিই ছিল ভিন্ন আমেজের। সেখানে সকালবেলায় গ্রামের প্রায় সবাই জড়ো হয়ে শুকনো লঙ্কা দিয়ে পান্তাভাত খায়, তারপর আনন্দমিছিল করতে করতে সমস্ত গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে একটি বড় মেলাও বসেছিল।মেলার মাঝখানে ফাঁকা জায়গাটিতে হয়েছিল মোরগ লড়াই, বানরখেলা, ষাঁড়ের লড়াই আর সন্ধ্যার কিছু আগে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত লাঠিখেলা। আমি সেবারই প্রথম সামনাসামনি লাঠিখেলা দেখেছিলাম। সারা রাত ধরে হয়েছিল পালাগান। পালাগানের বিষয় ছিল শরিয়ত ও মারফত। আমি সেদিন ধর্মসংক্রান্ত অনেক নিগূঢ় বিষয় শিখেছিলাম। বৈশাখী মেলাতে লোকসমাগম ছিল অত্যধিক। আশপাশের গ্রাম থেকে যেন লোকের বান নেমেছিল। রং-বেরঙের চুড়ি-ফিতা-খেলনা, নিত্যব্যবহার্য লোহার যন্ত্রপাতি, ঘর সাজানোর শোপিস, তৈজসপত্র, রকমারি সব নতুন নতুন জিনিসপত্র কিনতে সবাই সারা দিন ছিল ভীষণ ব্যস্ত। আমিও ওখান থেকে অনেক কিছু কিনেছিলাম। যাই হোক, এরকম অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আমি গতবারের পয়লা বৈশাখটি উপভোগ করেছি এবং মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জীবনের প্রতিটি পয়লা বৈশাখ আমি আমার গ্রামের বাড়িতেই পালন করব।