ক) কোথা থেকে তাহেরাকে বজরায় তুলে নেওয়া হলো?
খ) পানিতে ঝাঁপ দেয়া ছাড়া পাশের কামরা থেকে পালানো যায় না।এ কথা শুনে পীর সাহেব খুশি হলেন কেন?
গ) চিত্র অনুসারে 'বহিপীর' নাটকটিকে বিভক্ত করে দেখাও।
ঘ) চিত্র অনুসারে প্রমাণ কর যে, 'বহিপীর' একটি আদর্শ নাটক।
উত্তরঃ-
ক) ডেমরার ঘাট থেকে তাহেরাকে বজরায় তুলে নেওয়া হয়।
খ) নববিবাহিতা স্ত্রী আর পালাতে পারবে না জেনে পীর সাহেব খুশি হয়।বৃদ্ধ বয়সে বহিপীর বালিকা তাহেরাকে বিয়ে করে। কিন্তু বালিকা তাহেরা এ বিয়ে মেনে না নিয়ে বাড়ি থেকে পালায়। পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর অনুসন্ধান করতে গিয়ে পীর সাহেব এক সময় জানতে পারেন যে তারা একই বজরায় আশ্রয় পেয়েছেন। পীর সাহেবকে জানানো হয় যে তাহেরা যে কামরায় রয়েছে সেখান থেকে পানিতে ঝাঁপ দেওয়া ছাড়া পালানোর পথ নেই অর্থাৎ নববিবাহিতা স্ত্রী আর পালাতে পারবে না এমন নিশ্চয়তা পেয়ে পীর সাহেব খুশি হয়।
গ) 'বহিপীর' নাটকটি উদ্দীপকের দেখানো চিত্রের মতো প্রারম্ভ, প্রবাহ, উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে পরিণতি ও উপসংহারে উপনীত হয়।ডেমরার ঘাট থেকে তাহেরাকে বজরায় তুলে, নেওয়ার মাধ্যমে বহিপীর নাটকটি আরম্ভ। এরপর তাহেরার পালানোর কারণ অনুসন্ধান, বহিপীরের আগমন তার জীবনাচারের পরিচয়, হাতেম আলির পারিবারিক অবস্থার বর্ণনার মাধ্যমে নাটকটি কাহিনি গতি পায়। এরপর বহিপীরের সর্বগ্রাসী স্বার্থের বিপরীতে বালিকা তাহেরার বিদ্রোহের মাধ্যমে কাহিনির উৎকর্ষ সাধিত হয়। এর পরিণতিতে পীর সাহেবের পরাজয় ঘটে, তাহেরা হাতেম আলির হাত ধরে নব জীবনের পথে ধাবিত হয়। শেষে বহিপীর, হাতেম আলি আগের জীবনের প্রাত্যহিকতায় ফিরে যাওয়ার প্রয়াস পায়। > উদ্দীপকে একটি নাটকের কাহিনি অগ্রসর হওয়াকে পাঁচটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। একটি নাটকের কাহিনি প্রারম্ভ ও প্রবাহের মাধ্যমে চূড়ান্ত দ্বন্দ্বের দিকে এগিয়ে যায়। এরপর দ্বন্দ্বের পরিণতি দেখানো হয় এবং সবশেষে উপসংহারের মাধ্যমে নাটকটি শেষ হয়। উদ্দীপকে দেখানো নাটকের কাহিনির বিন্যাসের বিভিন্ন অংশ উপরিউক্ত আলোচনায় বহিপীর নাটকটির কাহিনিকে বিভক্ত করে দেখানো হয়েছে।
ঘ) একটি আদর্শ নাটকের কাহিনী বিন্যাসের যে বৈশিষ্ট্যগুলো উদ্দীপকে দেখানো হয়েছে তার সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে 'বহিপীর' নাটকে।'বহিপীর' নাটকটি গড়ে উঠেছে একটি ভণ্ডপীরের সর্বগ্রাসী স্বার্থ ও তার বিরুদ্ধে বালিকা তাহেরার বিদ্রোহের কাহিনিকে কেন্দ্র করে। নাটকের বালিকা তাহেরা বৃদ্ধ পীরকে স্বামী হিসেবে অস্বীকার করে বাড়ি থেকে পালায় এবং শহরগামী একটি বজরায় আশ্রয় পায়। ভাগ্যক্রমে একই বজরাতে এসে উপস্থিত হয় বৃদ্ধ পীর। এরপর শুরু হয় বহিপীর ও বালিকা তাহেরার দ্বন্দ্ব। ধূর্ত পীর তাহেরাকে ফিরে পেতে নানা কৌশল আর চক্রান্তের আশ্রয় নিলেও তাহেরা অনমনীয় থেকে সব প্রতিহত করে। তাহেরা হাশেম আলির হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে গমনের মাধ্যমে দ্বন্দ্বের পরিণতি সাধিত হয়। সবশেষে বহিপীরের সব বাস্তবতা মেনে নিয়ে আগের জীবনে ফিরে যায়।উদ্দীপকের চিত্র অনুযায়ী একটি নাটক শুরু হওয়ার পর তার কাহিনির বিকাশ ঘটবে। বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কাহিনিটির চূড়ান্ত দ্বন্দ্ব মুহূর্ত সৃষ্টি হবে। তারপর কোন সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর নাটকটির চূড়ান্ত দ্বন্দ্ব পরিণতির দিকে যাবে এবং সর্বশেষে একটি পরিসমাপ্তি ঘটবে।উদ্দীপকের চিত্র অনুযায়ী তাহেরাকে আশ্রয় প্রদানের মাধ্যমে 'বহিপীর' নাটকটি আরম্ভ ও বহিপীরের উপস্থিতিতে নাটকটির কাহিনি বিকশিত হয়। এরপর তাহেরা ও বহিপীর দ্বন্দ্বের ফলে চূড়ান্ত উৎকর্ষ সাধিত হয়। তাহেরা হাশেম আলির হাত ধরে চলে যাওয়ার মাধ্যমে নাটকটির পরিণতি এবং বহিপীরের বাস্তবতা মেনে নেওয়ার মাধ্যমে 'বহিপীর' নাটকটি উপসংহারে উপনীত হয়। তাই উদ্দীপকের চিত্র অনুযায়ী এটাই প্রমাণিত হয় 'বহিপীর' একটি আদর্শ নাটক।