উত্তরঃ- ভূমি বা মাটির অভ্যন্তরে সংরক্ষিত পানি হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি। বৃষ্টিপাত, বন্যা, জলোচ্ছাস ও বিভিন্ন জলাশয়ের পানি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে মাটির গভীরে গিয়ে জমা হয়।
অধিকাংশ সেচের ও মানুষের ব্যবহার্য পানির উৎস বা আধার হচ্ছে ভূগর্ভে বা মাটির নিচে। জনসংখ্যা বাড়ছে পানির চাহিদাও বাড়ছে। প্রতিদিন প্রচুর পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করার ফলে পানির স্তর মাটির অনেক গভীরে চলে গেছে। বিশেষ করে চৈত্র বৈশাখ মাসে ভূগর্ভ থেকে পানি পাওয়া কষ্টকর। এজন্য আগের মত ভূপৃষ্ঠের পানি ব্যবহারের ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে ফসলে সেচের জন্য বিভিন্ন জলাশয়ে পানি সংরক্ষণের উপায় গ্রহণ করতে হবে। ভূপৃষ্ঠস্থ জলাশয়ের পানি দিয়ে সেচ দিলে খরচ কম হয়। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত, নদী, বন্যা ও জলোচ্ছাসের মাধ্যমে পানি এসে বিল, খাল, ডোবা, নালা, হাওর, বাঁওড় ইত্যাদি ভরে যায়। জলাশয়গুলোর পানি সেচ বা অন্যকোন কাজে ব্যবহার খুব কম হয়। এই অধিকাংশ পানি নদী দিয়ে সমুদ্রে পড়ে। কিছু পানি মাটির রন্ধ্র দিয়ে মাটির গভীরে চলে যায় অর্থাৎ চুয়ানি হয় (Leaching), কিছু পানি মাটির গভীরে সমান্তরালে অনুস্রবণ হয় (Perculation) ও কিছু পানি বাষ্পীভূত (Evaporation) হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বৃষ্টিপাতের ৪৭ শতাংশ পানি গড়িয়ে অপচয় হয় বাকি ৫৩ শতাংশ পানি বাষ্পীভবন ও প্রশ্বেদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। গাছ গ্রহণকৃত পানির মাত্র ৫ শতাংশ কাজে লাগায় যা প্রশ্বেদন প্রক্রিয়ায় ত্যাগকৃত মোট পানির মাত্র এক শতাংশ। পানির এই অপচয় রোধ করতে পারলে জলাশয়গুলোতে পানি সংরক্ষণ করে সারা বছর সেচ দেয়া যাবে