১. হযরত ওমর (রা.) তরবারি হাতে লাফিয়ে উঠেছিলেন কেন?
উত্তরঃ- মহানবি (স.)-এর মৃত্যুশোক সহ্য করতে না পেরে হযরত ওমর (রা.) তরবারি নিয়ে লাফিয়ে উঠেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (স.)-এর অসুস্থতার কথা শুনে অনেক লোক মদিনায় উপস্থিত হয়েছিলেন। একসময় মহানবি (স.) পরপারে চলে যান। মহত্ত্ব, সত্য, সাম্য ও ধৈর্যের প্রতীক মহানবি (স.)-এর মৃত্যু যেন অবিশ্বাস্য। হযরত ওমর (রা.) তাঁর মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছিলেন না। এ জন্য বেদনায় ভারাক্রান্ত ওমর (রা.) তরবারি হাতে নিয়ে রাগান্বিত হয়ে লাফিয়ে উঠেছিলেন।
২. হযরত মুহম্মদ (স.) মদিনায় চলে যান কেন?
উত্তরঃ- হযরত মুহম্মদ (স.) নবুয়ত লাভের পর সত্য প্রচার করতে গিয়ে মক্কাবাসীর হাতে নিষ্ঠুরভাবে অত্যাচারিত হন। তাই আল্লাহর নির্দেশে তিনি মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে যান। তিনি ছিলেন ইসলাম ধর্মের ধারক ও বাহক। নবুয়ত লাভের পর তিনি চারদিকে ইসলামের বাণী পৌঁছে দিতে থাকেন। কিন্তু মক্কাবাসীরা তাঁর সত্যধর্ম গ্রহণ না করে উল্টো তাঁর ওপর অমানুষিক অত্যাচার করে এবং তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে। মক্কাবাসীর এ ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে আল্লাহর নির্দেশে হযরত মুহম্মদ (স.) মক্কা ছেড়ে ছড়ে মদিনায় চলে যান।
৩. হযরত মুহম্মদ (স.) আল্লাহর দাস (মানুষ) ও রাসুল। বুঝিয়ে লেখ। উত্তরঃ- হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন আমাদের মতো মানুষ এবং সেই সঙ্গে মানবকল্যাণের জন্য প্রেরিত আল্লাহর রাসুল।মানবকল্যাণের জন্য প্রেরিত মুহম্মদ (স.)-এর ওপর নাযিল হয় পবিত্র কুরআন। আর সেই কুরআনেই মহানবি (স.)-কে বলা হচ্ছে তিনি আল্লাহর দাস অর্থাৎ বান্দা বা মানুষ এবং সেই সঙ্গে রাসুল। মানুষের কল্যাণের পথে মহত্ত্ব, ক্ষমা, ধৈর্য ও মানবতার মহানায়ক মহানবি (স.) আমাদের মতোই জন্মগ্রহণ করেছেন।
৪. আমাদের মতোই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। মহানবি (স.)-এর উদ্দেশ্যই ছিল আল্লাহর পথে সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ে আসা। 'তিনি রাসুল, কিন্তু তিনি মানুষ' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ- তিনি রাসুল, কিন্তু তিনি মানুষ বলতে মহানবি (স.)-কে বোঝানো হয়েছে।মহানবি (স.) ছিলেন মহান ত্যাগ ও আদর্শের প্রতীক। তিনি মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর শোকাচ্ছন্ন জনতা দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। তাঁদের অনেকের ধারণা ছিল, মহানবি (স.) মরতে পারেন না। তাঁদের বোঝাতে হযরত আবুবকর (রা.) ঘোষণা দিলেন মহানবি (স.) একজন মানুষ এবং আল্লাহর রাসুল।
৫. হযরত আবুবকর (রা.)-এর আত্মবিস্তৃতির সম্ভাবনা ছিল কেন?
উত্তরঃ- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহম্মদ (স.)-এর মৃত্যুতে প্রচণ্ড শোকে হযরত আবুবকর (রা.)-এর আত্মবিস্মৃতির সম্ভবনা ছিল।মহানবি (স.) যখন ইন্তেকাল করেন, তখন সকলেই দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় ইসলামের হাল ধরার মতো ছিলেন শুধু হযরত আবুবকর (রা.)। তিনি মূর্ছিত জনতাকে ধীরকণ্ঠে শান্ত করলেন। কিন্তু মহানবি (স.)-এর মৃত্যুতে প্রচণ্ড শোকে হযরত আবুবকর (রা.)-এর আত্মবিস্মৃতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
৬. মহানবি (স.) ভীষণ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন কেন?
উত্তরঃ- সত্য প্রচার করতে গিয়ে অজ্ঞ, জ্ঞানহীন মানুষের অত্যাচারের মুখে পড়েছিলেন মহানবি (স.), যা ছিল তাঁর নিকট ভীষণ পরীক্ষার মতো।তায়েফে সত্য প্রচার করতে গিয়ে তাঁর জীবনে নেমে আসে নিষ্ঠুর অত্যাচার। তাদের পাথরের আঘাত তাঁকে রক্তাক্ত করেছিল। চৈতন্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তারাই আবার মহানবি (স.)-কে তুলে দিয়েছে এবং পুনরায় পাথর নিক্ষেপ করেছে। তায়েফে সত্য প্রচার করতে যাওয়া মহানবি (স.)-এর কাছে ছিল ভীষণ পরীক্ষার।