ক. মক্কি সূরা কয়টি?
খ. মাদানি সূরা চেনার উপায় কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত চিত্র দুটির মধ্যে কোনটি শ্রেষ্ঠ? যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখ।
ঘ. আদর্শ জীবন গঠনে চিত্র-১ এ উল্লেখিত গ্রন্থের ভূমিকা আলোচনা করো।
প্রশ্নের উত্তরঃ-
ক) মক্কি সূরা ৮৬টি।
খ) সূরার আলোচ্য বিষয় ও আকার দেখে মাদানি সুরা চেনা যায়।
মাদানি সুরাগুলো আকারে বড় ও আয়াত দীর্ঘ হয়। এগুলোতে ইসলামের বিধি-বিধান, রীতি-নীতি, ক্রয়-বিক্রয়, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও যুদ্ধের নিয়মনীতি সম্পর্কে এই সুরাগুলোতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মুনাফেকদের ষড়যন্ত্রের কথাও এগুলোতে প্রকাশ করা হয়েছে।
গ) চিত্র : ১ এ প্রদর্শিত কিতাবটি আল কুরআন হওয়ায় তা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে আল কুরআন রাসুল (স.) এর ওপর সরাসরি অবতীর্ণ হয়। এটি ওহিয়ে মাতলু। আর হাদিস হলো ওহিয়ে গাইরে মাতলু। চিত্র-২ এ একাধিক কিতাব থাকায় সেগুলো হাদিসগ্রন্থ। হাদিসের চেয়ে কুরআনের মর্যাদা অনেক বেশি। উদ্দীপকে দুটি চিত্রে কুরআন ও হাদিসগ্রন্থ দেখানো হয়েছে। কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম আর হদিস হলো রাসুল (স.) এর মুখনিসৃত অমীয় বাণী। কুরআন নামাজে তিলাওয়াত করা হয় কিন্তু হাদিস নামাজে পাঠ করা যায় না। কুরআনের প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতের বিনিময়ে দশটি নেকির প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু হাদিসের বিষয়ে এমন প্রতিশ্রুতি নেই। করআন সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা নিজে গ্রহণ করেছেন কিন্তু হাদিসের ব্যাপারে এমন প্রতিশ্রুতি নেই। কুরআন ইসলামি শরিয়তের প্রথম ও প্রধান উৎস এবং হাদিস দ্বিতীয় উৎস। কুরআন রবের সাথে সম্পর্কযুক্ত আর হাদিস বান্দার সাথে সম্পর্কযুক্ত। উপরের আলোচনার মাধ্যমে হাদিসের ওপর কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়।
ঘ) আদর্শ জীবন গঠনে চিত্র: ১-এ উল্লেখিত গ্রন্থ তথা আল কুরআনের ভূমিকা অপরিসীম।আল কুরআন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। মানবজীবনের এমন কোনো দিক নেই, যার নির্দেশনা কুরআনে প্রদান করা হয়নি। মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক এক কথায় জীবনের সার্বিক দিক এতে আলোচনা করা হয়েছে।আল-কুরআন ব্যক্তিকে সর্বপ্রকার অন্যায়-অপরাধ, কুফর, শিরক ও আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে মুক্ত হয়ে তাওহিদের পথে চলার নির্দেশ দেয়। ব্যক্তিকে কর্মমুখী হতে বলে। মানুষের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলে। সামাজিক জীবনে অবিচার, জুলুম, হত্যা, ছিনতাই, ব্যভিচার ইত্যাদি খারাপ আচরণ পরিহারের নির্দেশ দেয়। কুরআন মানুষকে সুপথ প্রদর্শন করে। আল্লাহ বলেন, 'আর আমি আপনার ওপর কিতাব নাজিল করেছি। তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, সুপথের নির্দেশনা, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।' (সুরা আন নাহল- ৮৯) কুরআন মানুষকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনের দিক নির্দেশনা রয়েছে। সেগুলো অনুসরণ করে একজন ব্যক্তি আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, আদর্শ জীবন গঠনের ক্ষেত্রে কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।