আস্ক টু আন্স প্লাটফর্মে আপনাকে স্বাগতম, সমস্যার সমাধান খুঁজতে প্রশ্ন করুন।।
0 টি ভোট
89 বার প্রদর্শিত
"পড়াশোনা" বিভাগে করেছেন (569 পয়েন্ট)

  • কে সিন্ধু ও মুলতান জয় করেন?
  • আরবদের সিন্ধু অভিযানের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল?

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (569 পয়েন্ট)

উদ্দীপকঃ-

=> আরিফ 'ক' সাম্রাজ্যের ইতিহাস পাঠ করে জানতে পারে যে, সম্রাট 'M' ও সম্রাট 'Z' এর মৃত্যুর পর সমগ্র সাম্রাজ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এসব রাজ্যর মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা বিদ্যমান ছিল। এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে কোনো প্রকার রাজনৈতিক ঐক্য বিদ্যমান ছিল না। তখন দেশে কোনো প্রকার কেন্দ্রীয় সরকারও ছিল না। ফলে তারা কোনো প্রকার বহিরাক্রমণের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।


প্রশ্নঃ-

ক. কে সিন্ধু ও মুলতান জয় করেন?

খ. আরবদের সিন্ধু অভিযানের প্রাক্কালে ভারতের সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল?

গ. আরিফের পঠিত 'ক' সাম্রাজ্যের ইতিহাসের সাথে তোমার পঠিত মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যগুলো কী কী ব্যবস্থা নিলে বহিঃ আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারত বলে তুমি মনে কর? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।


 প্রশ্নের উত্তরঃ-


ক) মুহাম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু ও মুলতান জয় করেন।


গ) আরিফের পঠিত 'ক' সাম্রাজ্যের ইতিহাসের সাথে মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ। কোনো রাজ্যে রাজনৈতিক ঐক্য না থাকলে সে রাজ্যের পতন অনিবার্য।

রাজনৈতিক অনৈক্যের সুযোগে বহিঃশত্র আক্রমণ করে সহজেই রাজ্য জয় করে নেয়। উদ্দীপক ও মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের রাজনৈতিক বাস্তবতাই তার প্রমাণ। উদ্দীপকের 'ক' রাজ্যের ইতিহাস থেকে দেখা যায়, রাজ্যটিতে কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। ফলে বহিরাক্রমণের বিরুদ্ধে রাজ্যটি কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। একই রূপ ঘটনা পরিলক্ষিত হয় মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতবর্ষের ইতিহাসে। সে সময় মৌর্য সম্রাট অশোক (২৭৩-২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) এক বিশাল ও বিস্তৃত সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে ভারতবর্ষে একক রাজনৈতিক প্রভুত্ব কায়েম করতে সক্ষম হন। কিন্তু তার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই ভারতবর্ষের রাজনৈতিক আকাশে কয়েক শতাব্দী ধরে অস্থিরতা বিরাজমান থাকে। অতঃপর সপ্তম শতকের প্রথম ভাগে উত্তর ভারতে সম্রাট হর্ষবর্ধন এবং দক্ষিণ ভারতে চালুক্য সম্রাট পুলকেশি ভারতবর্ষে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালান। এ দুই মহান শাসকের মৃত্যুর পর সমগ্র ভারতীয় ভূখণ্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ সকল রাজ্যের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। ফলে তারা বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় কোনো একক শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়।


ঘ) উদ্দীপকে বর্ণিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যগুলো সম্মিলিত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারত বলে আমি মনে করি।

উদ্দীপকের 'ক' সাম্রাজ্যটি মূলত মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালের ভারতবর্ষ। শতধাবিভক্ত ভারতবর্ষ রাজনৈতিক অনৈক্যের কারণেই মুসলিম শাসকদের অধিকারে চলে যায়। এক্ষেত্রে ঐক্য থাকলে তারা সহজেই বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারত। মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যসমূহকে (আফগানিস্তান, কাশ্মির, কনৌজ, সিন্ধু, মালব, গুজরাট, বুন্দেলখণ্ড, আসাম, বাংলা প্রভৃতি) যদি একটি কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার অধীনে রাখা যেত তাহলে তারা বহিঃশত্রুর বিরুদ্ধে প্রবলভাবে রুখে দাঁড়াতে পারত। ভারতীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যসমূহ যদি নিজেদের মধ্যকার পরস্পর বিভেদ ভুলে গিয়ে একে অপরের সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসত তাহলে তারা বহিঃশত্রুদের সহজভাবে মোকাবিলা করতে পারত। এছাড়াও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভারতীয় রাজ্যের রাজারা যদি সকলে একমত পোষণের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করত এবং এর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করত তাহলে তারা বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারত। এছাড়াও সকল রাজা মিলে যদি সীমান্ত নিরাপত্তায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করত এবং দুর্গসমূহ সংরক্ষিত করত তাহলে তারা বিদেশি আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারত। উপর্যুক্ত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করলে উদ্দীপকে বর্ণিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যগুলো বহিঃশত্রুর আক্রমণ মোকাবিলা করতে সক্ষম হতো।


উদ্দীপকঃ-

=> সম্প্রতি চীনের দুটি যুদ্ধ জাহাজ জাপান নিয়ন্ত্রিত সেনকাকু দ্বীপের জলসীমায় প্রবেশ করে। চীনের কাছে দ্বীপটি দিয়ায়স নামে পরিচিতি এবং এটিকে তারা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য দু'বার অভিযান প্রেরণ করে। কিন্তু এ অভিযান দুটিতে তারা ব্যর্থ হয়েছিল দু'বছরের পরাজয়ের গ্লানি মুছে ফেলার জন্য তারা আবার অভিযান প্রেরণ করে এবং এই অভিযানে সফল হয়।


প্রশ্নঃ-

ক. হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কে ছিলেন?

খ. আরবদের ভারত অভিযানের প্রাক্কালে কনৌজ-এর অবস্থা কেমন ছিল?

 গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত অভিযানের ঘটনাবলি ভারতের ইতিহাসে কোন ঘটনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উত্ত অভিযানের ফলে ব্রাহ্মণ্যবাদ, আলোর ও মুলতানের পতন ঘটেছিল? বিশ্লেষণ কর।


প্রশ্নের উত্তরঃ-


ক) হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ছিলেন উমাইয়া খলিফা আল ওয়ালিদের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের শাসনকর্তা।


খ) অষ্টম শতাব্দীর প্রথম দিকে কনৌজ ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। এ সময় যশোবর্মণ এ রাজ্যের রাজা ছিলেন। তাঁর সময় কনৌজ রাজনৈতিক প্রতিপত্তি ও সামরিক মর্যাদায় উত্তর ভারতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। যশোবর্মণের শাসনামলে তার সাম্রাজ্য হিমালয় হতে নর্দমা পর্যন্ত এবং বঙ্গদেশ হতে থানেশ্বর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ১০১৮ খ্রিস্টাব্দে সুলতান মাহমুদ কনৌজে অভিযান চালান।


গ) উদ্দীপকের ঘটনা মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু অভিযানের কথা মনে করিয়ে দেয়।

দুবার অভিযান পরিচালনা করে ব্যর্থ হওয়া এবং সেই ব্যর্থতার গ্লানি দূর করতে পুনর্বার অভিযান পরিচালনা করাই উদ্দীপকে বর্ণিত চীনাদের অভিযান এবং মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু অভিযানের মধ্যে সাদৃশ্য স্থাপন করেছে। এক্ষেত্রে উভয় অভিযানের প্রকৃতি একই ধরনের। উদ্দীপকের বর্ণিত চীনারা পূর্বে দুইবার চেষ্টা করেও জাপানের টোকিও নিয়ন্ত্রিত 'সেনকাকু দ্বীপ' দখল করতে পারেনি। এ প্রেক্ষিতে তারা আবার দ্বীপটি দখলের জন্য অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ধরনের ঘটনা মুসলমানদের সিন্ধু (বর্তমান পাকিস্তানের একটি প্রদেশ) অভিযানের ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয়। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ৭১০ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে প্রথমে সেনাপতি ওবায়েদুল্লাহ এবং পরে বুদাইলের নেতৃত্বে সিন্ধুরাজ দাহিরের বিরুদ্ধে পরপর ২টি অভিযান প্রেরণ করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অভিযান দুটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। দুবার পরাজয়ের গ্লানি মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ৭১১ খ্রিস্টাব্দে স্বীয় ভ্রাতৃম্পুত্র ও জামাতা মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে সিন্ধুতে তৃতীয় অভিযান প্রেরণ করেন। মুহাম্মদ বিন কাসিম ৬০০০ বাছাই করা সৈন্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। ৭১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রাজা দাহিরকে পরাজিত করে সিন্ধুতে নিল কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, অভিযানের প্রকৃতিগত দিক এবং ঘটনাপ্রবাহ বিবেচনায় উদ্দীপকটি মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু অভিযানের সাথেই তুলনীয়।


ঘ) উক্ত অভিযান অর্থাৎ মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু অভিযানের ফলে ব্রাহ্মণ্যবাদ, আলোর ও মূলতানের পতন ঘটেছিল।

আরবদের সিন্ধু বিজয় ভারতবর্ষের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। হাজ্জাজ বিন ইউসুফের উৎসাহ ও প্রেরণায় মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে আরবরা সিন্ধুতে অভিযান প্রেরণ করেন, যা উদ্দীপকের চীন অভিযানেও লক্ষ করা যায়। উদ্দীপকে লক্ষণীয় যে দিয়ায়ুস দ্বীপটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য চীন দুর্বার অভিযান প্রেরণ করে। দু'বার ব্যর্থ হবার পর ৩য় অভিযানে তারা সফলকাম হয়। অনুরূপভাবে মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে অভিযানে আরবরা সিন্ধু ও মুলতানসহ বেশকিছু অঞ্চল অধিকার করতে সক্ষম হয়। সিন্ধু রাজ্যের রাজধানী ছিল আলোর। রাজ্যটি ব্রাহ্মণ্যবাদ, সিস্তান, ইস্কান্দো ও মুলতান চারটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল। খলিফা ওয়ালিদের নির্দেশে প্রেরিত অভিযানে আরবরা দু'বার ব্যর্থ হয়। অবশেষে ৭১২ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে অভিযানে সিন্ধুর দেবল বন্দর আক্রমণের মধ্যদিয়ে সিন্ধুতে কাসিমের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়। রাজা দাহিরের পরাজয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদ ও সিন্ধুর রাজধানী আলোর আরবদের করতলগত হয়। অবশেষে মুহাম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু শক্তির শেষ উৎস মূলতান নগরী অবরোধ করেন। তীব্র প্রতিরোধ মোকাবিলা করে ৭১৩ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম বাহিনী মূলতান জয় করে। পরিশেষে বলা যায় যে, মুহাম্মদ বিন কাসিমের সিন্ধু অভিযানের ফলে ব্রাহ্মণ্যবাদ, আলোর ও মুলতানের পতন ঘটেছিল।

Ask2Ans এ আপনাকে সুস্বাগতম, এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং Ask2An অন্যান্য সদস্যদের নিকট থেকে উত্তর পাবেন। এখান থেকে যেমন আপনি জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন তেমনিই এটি ব্যবহার করে আপনার জ্ঞান দিয়ে অপরকে সহায়তা করতে পারবেন। জ্ঞানার্জনের অন্যতম বাংলা প্লাটফর্ম হলো Ask2Ans, আমাদের সাথে থাকুন জ্ঞানঅর্জন করুন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 70 বার প্রদর্শিত
17 ডিসেম্বর 2023 "পড়াশোনা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hasib (569 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 33 বার প্রদর্শিত
10 ডিসেম্বর 2023 "পড়াশোনা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (525 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 51 বার প্রদর্শিত
24 ডিসেম্বর 2023 "পড়াশোনা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hasib (569 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 55 বার প্রদর্শিত
17 ডিসেম্বর 2023 "পড়াশোনা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hasib (569 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 53 বার প্রদর্শিত
25 ডিসেম্বর 2023 "পড়াশোনা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (525 পয়েন্ট)
...