-
প্রশ্ন- "তাহারেই পড়ে মনে" কবিতায় উল্লিখিত প্রকৃতির পরিবর্তনের পরিচয় দাও?
উত্তরঃ- তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবির প্রকাশিত বক্তব্যে প্রকৃতির পরিবর্তন ও বৈশিষ্ট্যের দিক প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর মতে, প্রকৃতি তার নিজস্ব নিয়মেই আবর্তিত হয়।মাঘের সন্ন্যাসীর বিদায় দৃশ্য কবির মনকে বিরহকাতর করে রেখেছে। তাই ঋতুরাজ বসন্ত কবির মনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। কারণ শীতের সন্ন্যাসীরূপ প্রিয়জন হারানো গভীর বেদনা জমে আছে তাঁর অন্তরজুড়ে। এজন্যই বসন্তের প্রতি কবি উদাসীন। তিনিও অন্যান্যের মতো প্রতিবছর বসন্তের আগমনে বন্দনাগীত রচনা করতেন। কিন্তু কবি এবার সম্পূর্ণ নীরব, নিশ্চুপ । কবির এ উদাসীনতা লক্ষ করে তাঁর ভক্ত বসন্তের প্রশস্তি রচনায় তাঁকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করলে কবি বলেন, বন্দনাগীত রচনা করে বসন্তকে বরণ না করলেও বসন্ত অপেক্ষা করেনি। ফাল্গুন আসার সাথে সাথেই প্রকৃতি মাতিয়ে বসন্ত এসেছে। অর্থাৎ প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে কেউ বন্দনা করা না করার মধ্যে কিছু যায় আসে না। প্রাকৃতিক নিয়মেই সে আসে এবং যায়।
-
প্রশ্ন- "তাহারেই পড়ে মনে" কবিতায় কোন বিষয়টি প্রত্যাশা করা হয়েছে?- ব্যাখ্যা কর?
উত্তরঃ- কবিতাটিতে কবির ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার প্রত্যাশা করা হয়েছে।তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবির ব্যক্তিজীবনের দুঃখময় ঘটনার কথা বলা হয়েছে। সাধারণভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য মানবমনের অফুরন্ত আনন্দের উৎস। বসন্ত প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যে কবিমনে আনন্দ শিহরণ জাগাবে এবং তিনি তাকে ভাবে-ছন্দে-সুরে ফুটিয়ে তুলবেন সেটিই প্রত্যাশিত। কবিমন যদি কোনো কারণে শোকাচ্ছন্ন কিংবা বেদনা-ভারাতুর থাকে তবে বসন্ত তার সমস্ত সৌন্দর্য সত্ত্বেও কবির অন্তরকে স্পর্শ করতে পারে না।
-
প্রশ্ন- “প্রকৃতির প্রভাবে কখনো কখনো মানবমনে বেদনার সুর বেজে ওঠে।"- উক্তিটির প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা কর?
উত্তরঃ- প্রকৃতির প্রভাবে কবি সুফিয়া কামালের মনে স্বামী হারানোর বেদনার সুর বেজে ওঠে।মানুষের অন্তর্লোকে মাঝে মাঝে এমন কিছু গভীর কষ্টবোধের অনুভূতি প্রকটভাবে জাগ্রত হয় যা পারিপার্শ্বিকতার আনন্দঘন পরিবেশের মাঝেও তাকে উদাসীন ও নির্লিপ্ত রাখে। শীতের নিঃস্বতায় কবি খুঁজে পেয়েছেন নিজের নিঃসঙ্গ জীবনের সাদৃশ্য। তাই কবি সুফিয়া কামাল তাঁর 'তাহারেই পড়ে মনে' কবিতায় বসন্তের অপরূপ রূপের হাতছানির মাঝেও মনের উদাসীনতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন বিরহ-বেদনার করুণ হাহাকারে। কবি তাঁর অতীত শোকাচ্ছন্ন স্মৃতি কোনোমতেই ভুলতে পারেননি বলে সৌন্দর্যময় প্রকৃতি তার মনে কোনো আনন্দের হিল্লোল জাগাতে পারেনি। কবিমনের এমন অনুভূতিতে তাই সুস্পষ্ট যে, প্রকৃতির প্রভাবে কখনো কখনো মানবমনে বেদনার সুর বেজে ওঠে।